তাজবিদ, মাদ্দ

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ইসলাম শিক্ষা - কুরআন ও হাদিস শিক্ষা | | NCTB BOOK

পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত অনেক। এটি নফল ইবাদাতের মধ্যে সর্বোত্তম ইবাদাত। কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,

অর্থ: ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব থেকে একটি হরফও পাঠ করবে, সে একটি নেকি লাভ করবে। আর এ নেকির পরিমাণ হলো দশগুণ।' (তিরমিযি)

পবিত্র কুরআনের প্রতিটি হরফ বা বর্ণ তিলাওয়াতের দশটি করে সাওয়াব লেখা হয়। যেমন: بسملا حير الرحمنير رحيم (বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম) -এর মধ্যে ১৯টি বর্ণ রয়েছে। কেউ যদি এটি তিলাওয়াত করে তবে সে (১৯×১০) = ১৯০টি নেকি লাভ করবে।

কুরআন তিলাওয়াত করতে হবে তাজবিদ অনুসারে। আল কুরআনকে নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন অনুযায়ী শুদ্ধ ও সুন্দররূপে পাঠ করাকে তাজবিদ বলে। তাজবিদ অনুযায়ী কুরআন পড়া ওয়াজিব বা আবশ্যক। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,

অর্থ: ‘কুরআন তিলাওয়াত করো ধীরে ধীরে ও সুস্পষ্টভাবে।' (সূরা আল-মুযাম্মিল, আয়াত: ৪)

তাজবিদ অনুসারে কুরআন না পড়লে গুনাহ হয়। এতে অনেক সময় কুরআনের অর্থ পরিবর্তন হয়ে যায়। আর অশুদ্ধ তিলাওয়াতের ফলে সালাতও পূর্ণাঙ্গ হয় না। তাই আমাদেরকে অবশ্যই তাজবিদ অনুযায়ী কুরআন তিলাওয়াত করতে হবে।

তাজবিদ অনুযায়ী কুরআন তিলাওয়াতের বেশ কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে। যেমন: মাখরাজ, সিফাত, মাদ্দ, ওয়াকফ, গুন্নাহ ইত্যাদি। পূর্ববর্তী শ্রেণিসমূহে আমরা তাজবিদের বেশকিছু নিয়ম সম্পর্কে জেনেছি। এ শ্রেণিতে আমরা মাদ্দ ও ওয়াকফ সম্পর্কে জানব ।

 

মাদ্দ

মাদ্দ শব্দের অর্থ দীর্ঘ করা, লম্বা করা। তাজবিদের পরিভাষায় মাদ্দের হরফের ডান দিকের হরকতযুক্ত হরফ লম্বা করে পড়াকে মাদ্দ বলা হয়। মাদ্দ বিশিষ্ট হরফটি উচ্চারণকালে শ্বাস এবং আওয়াজকে দীর্ঘ করে পড়তে হয়।

মাদ্দের হরফ মোট তিনটি। যথা- আলিফ, ওয়াও, ইয়া (ا-و-ي) ।

এ তিনটি হরফ নিম্নলিখিত অবস্থায় মাদ্দের হরফ হিসেবে উচ্চারিত হয় :

প্রকারভেদ

মাদ্দ প্রধানত দুই প্রকার। যথা- 

১. মাদ্দে আসলি (মূল মাদ্দ )

২. মাদ্দে ফারঈ (শাখা মাদ্দ )

নিম্নে এ দুটির সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরা হলো:

১. মাদ্দে আসলি (মূল মাদ্দ):

ওয়াও সাকিনের পূর্বের হরফে পেশ, আলিফের পূর্বের হরফে যবর এবং ইয়া সাকিনের পূর্বের হরফে যের থাকলে তাকে মাদ্দে আসলি বলে।

উল্লেখ্য, একটি সোজা আঙুলকে স্বাভাবিকভাবে বাঁকা করে হাতের তালুতে লাগাতে যে সময়ের প্রয়োজন, তাকে এক আলিফ পরিমাণ সময় বলে। এভাবে দুই, তিন ও চার আলিফ পরিমাণ সময় নির্ধারণ করা যায়। । উদাহরণ:  

জোড়ায় কাজ: কুরআন তিলাওয়াতে তাজবিদের গুরুত্ব সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লেখ। 

দলগত কাজ: মাদ্দের প্রকারভেদের একটি তালিকা তৈরি করো। 

বাড়ির কাজ: মাদ্দের নাম ও কোন মাদ্দ কয় আলিফ পরিমাণ দীর্ঘ করে পড়তে হয় তা লেখ।

Content added || updated By

আরও দেখুন...

Promotion